ফুটন্ত তেলে হাত ডুবিয়ে রান্না
প্রতিক্ষণ ডেস্ক:
ভারতের নয়াদিল্লীর একটি রেস্টুরেন্টে আগত অতিথিদের ভিড় অন্যান্য রেস্টুরেন্টগুলো থেকে তুলনামূলকভাবে বেশি। কারণ, এখানকার ৬৫ বছর বয়সী বাবুর্চি প্রেমকুমারের রান্নার ধরণ অন্যদের থেকে একেবারেই ভিন্ন। গরম কড়াইয়ের ফুটন্ত তেলের মধ্যে হাত ডুবিয়ে মাছ ভাজতে ভাজতে খদ্দেরদের সঙ্গে গল্প করতে থাকেন তিনি। গরম তেলের মধ্যে হাত ডুবিয়ে মাছ ভাজা সত্ত্বেও হাতে ফোসকা তো পড়েই না, গরম লাগার কোনো লক্ষণও দেখা যায় না তাঁর চোখেমুখে!
প্রেম কুমার প্রতিদিন প্রায় ১৫০ কিলোগ্রাম মাছ, মাংস টিকা, আলুসহ হরেক রকমের খাবার নিজ হাতেই ভেজে প্রায় ১০০০জন খদ্দেরের পরিবেশনের ব্যবস্থা করে থাকেন। আগতদের বেশিরভাগই খাবারের পাশাপাশি তার এই ভিন্নধর্মী রান্না দেখানোর অনুরোধ জানিয়ে থাকেন।
এ নিয়ে প্রেম কুমার বলেন, ‘‘আমি সব সময় হাত দিয়ে মাছ ভাঁজার চেষ্টা করি না। খদ্দেররা অনুরোধ করে তখনই আমি এটি করি। বেশির ভাগ সময়ই রান্না করার জিনিস দিয়ে রান্না করে থাকি।’’
১৯৬০ সাল থেকে প্রেম কুমারের বাবা এই রেস্টুরেন্টটি চালিয়ে আসছে। আশ্চর্যজনকভাবে বাবার মতো তিনিও একইভাবে বিভিন্ন খাবার নিজ হাতে ভেজে আসছেন। এতে কখনোই তাদের হাতে বা অন্য কোথাও কোন ক্ষতি হয়নি। এ প্রসঙ্গে প্রেম কুমার আরোও বলেন,
ঈশ্বরপ্রদত্ত কোন চমৎকার নয়, ছেলেবেলা থেকেই বাবার কাছ থেকে দেখে আসতে থাকায় অনেক বছর চেষ্টার ফল এটি।
অবশ্য বিজ্ঞান এর অন্য রকম ব্যাখা দিয়েছে। এটিকে বলা হয় লেইডেনফ্রস্টের প্রভাব। অনেকক্ষণ ঠান্ডা পানির মধ্যে হাত ডুবিয়ে রাখলে, ত্বকের উপর এক ধরনের প্রলেপ সৃষ্টি হয়। তখন গরম কোন পানীয়তে হাত দিলে বিনা ব্যাথায় হাত নাড়ানো যায়।
প্রেমরাজের দুর্লভ এই দক্ষতা জনপ্রিয় করে তুলছে তাকে। রেস্টুরেন্টটিতে প্রতিনিয়তই বাড়ছে প্রেমরাজের রান্না দেখার জন্য উৎসুক জনতার ভীড়।
প্রতিক্ষণ/এডি/এস.আর.এস